তানিম আহমদ, স্টাফ রিপোর্টার,
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের আকবরপুর এলাকার প্রভাবশালী নিপু চন্দ্র রায় এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মনি পাশী নামের এক নারী।
শনিবার ২৬ এপ্রিল দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আকবরপুর এলাকার সৎনারায়ন পাশীর মেয়ে মনি পাশী লিখিত বক্তব্যে বলেন, তিনি একজন অসহায়, দিনমজুর ও নিরহ মানুষ। তার প্রতিবেশী নিপু চন্দ্র রায়, পিতা : মৃত: সুধীর চন্দ্র রায়, নিলয় চন্দ্র রায়, পিতা : নিপু চন্দ্র রায়, শান্তিবাগ, এস আর ভবন, মৌলভীবাজার পৌরসভা গংরা- ধনে-জনে বলীয়ান ও পরধন লোভী। এছাড়াও তিনি নিপু চন্দ্র রায় এর সহযোগী ওই এলাকার একদল প্রভাবশালীর কবল থেকে রক্ষা পেতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও জণসাধারণকে অবহিত করা এবং সকল প্রকার সহযোগীতা চেয়ে সংবাদ সম্মেলনে দাবী তুলেন।
গিয়াসনগর ইউনিয়নের আকবরপুর মৌজায় আমার দাদা শিবপ্রসাদ পাল (ওরফে) শিবপ্রসাদ পাশী ও দাদার ভাই দুর্গাপ্রসাদ পাল (ওরফে) দুর্গা প্রসাদ পার্শী এর ৮৬. ০০ শতক জমি রয়েছে। যার এস এ খতিয়ান নং-৩৩৩, দাগ নং- ৮৯৯ ও ৯০০। শিবপ্রসাদ পাল ও দৃর্গা প্রসাদ পাল এই দুই ভাই দুই অংশ। শিবপ্রসাদ পাল এর ৪৩ শতক ও দুর্গাপ্রসাদ পাল এর ৪৩ শতক। শিব প্রসাদ পাল এর দুই ছেলে সৎনারায়ন পাশী এবং জয় নারায়ন পাশী। দুর্গাপ্রসাদ পাল নিঃসন্তান। দুর্গাপ্রসাদ পাল নিঃসন্তান থাকায় আমার মা তার দেখাশুনা ও সেবা-শুশ্রুষা করেন। তাই বিগত ১৯৮৫ ইং সালে আমার মা রামপতি পাশীকে তিনি তার ৪৩ শতক জমি দানপত্র দলিল করে জমির দেখাশুনা ও ভোগদখলের দায়িত্ব দেন। সুধীর চন্দ্র রায় বিগত ১৯৯০ ইং সালে শিব প্রসাদ পাল এর দুই সন্তান সৎনারায়ন পাশী (মানসিক রোগী) ও জয় নারায়ন পাশীর ৪৩ শতক জমি কিনে ক্রয়সূত্রে মালিক হন। তার মা মৌরসীসূত্রে বাকি ৪৩ জমির মালিক।
উক্ত জমি জবরদখলের জন্য নিপু চন্দ্র রায়গংরা একাধিকবার জমির মালিকানা কাগজপত্র ছিনিয়ে নিতে ও প্রাণে মেরে ফেলার জন্য হামলা-ভাংচুর ও লুঠপাট করেন। বিগত- ২০১৭ইং আমার মাকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দ্বারা মাথায় ও পায়ে গুরুতর আহত করে। উক্ত ঘটনায় মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে নিপু চন্দ্র রায় ২১ দিন জেল হাজতে ছিলেন।
সর্বশেষ একই ভাবে ২০ এপ্রিল নিপু চন্দ্র রায় ও তার ছেলে নিলয় চন্দ্র রায় এবং তাদের ভাড়াটিয়া মাস্তান ও বখাটেদের নিয়ে আমাদের বসত বাড়িতে হামলা-লুঠপাট, ভাংচুর ও নারকীয় তান্ডব চালায়। এ সময় প্রতিবাদ করলে আমার অসুস্থ বাবা (মানষিক প্রতিবন্ধী), মা-ভাই ও পরিবারের অন্যান্যদের উপর নির্যাতন করেন।
তিনি আরও বলেন, হামলাকারীরা বসতবাড়ির লোহার গেইট ভেঙে প্রবেশ করে দুইটা টিনের ঘর ভাংচুরসহ আমাদের মেইনঘরের সমগ্র মালামাল লুটপাট করে। আমার মাকে মারধোর করে। আমার মার বুকে তাদের পক্ষ হয়ে আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী সজোরে লাথি মারে। পাশাপাশি লোহার রড দিয়ে প্রাণে শেষ করে দেয়ার জন্য এলোপাতাড়ি আঘাত করে। আমার ভাই আশীষ পাশী ও প্রদিপ পাশী গুরুতর জখমী হয়। গুরুতর জখমী হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মা রামপতি পাশী বাদী হয়ে গত ২১ এপ্রিল তারিখে মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার উপর নিপু চন্দ্র রায়ের ছেলে নিলয় চন্দ্র রায় গত ২০-০৪-২৫ ইং তারিখে উল্টো আমাদেরকে হয়রানী করার উদ্যেশে মিথ্যা মামলা দায়ের করলে গত ২১-০৪-২৫ইং, আমার ভাই প্রদিপ পাশীকে মৌলভীবাজার মডেল থানার এস.আই পবিত্র শেখর দাশ তাকে নিয়ে যায়।
প্রভাবশালী নিপু চন্দ্র রায় আমাদেরকে হয়রানী ও আমাদের মৌরসীসুত্রে প্রাপ্ত বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রেও অংশ হিসাবে গত ২২ এপ্রিল-২০২৫ইং, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি ১২নং গিয়াসনগর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান জনাব-গোলাম মোশারফ টিটু-কে নিয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা গরিব, নিরীহ। পক্ষান্তরে- উনি প্রভাবশালী। আমরা প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচারের প্রার্থনা জানাই।