এ.কে পলাশ কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা লালমাইয়ে বাড়ির আঙিনায় বাবার লাশ রেখেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন নাহিদ। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফিরে বাবার লাশ কাঁধে নিয়ে শেষ বিদায়ে শামিল হন এই শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়নের বড়হাড়গিলা গ্রামে হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামে নাহিদের বাবা আক্তার হোসেনের (৪৫) জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে, বুধবার রাত দেড়টার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বৃহস্পতিবার সকালে দাফনের কথা থাকলেও নাহিদের এসএসসি পরীক্ষার জন্য দাফনের সময় পিছিয়ে বিকেলে নির্ধারণ করা হয়।
নাহিদ এ বছর স্থানীয় মাতাইনকোট উচ্চবিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। সে উপজেলার হরিশ্চর হাইস্কুল অ্যান্ড
কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে।
পরীক্ষার্থী নাহিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, তার বাবা চার মাস ধরে টিবি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ঋণ করে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বাবার চিকিৎসার চেষ্টা করেছে তার পরিবার। গত মঙ্গলবার বিকেলে তার বাবার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বুধবার সে বাড়িতে থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এরই মধ্যে দিবাগত রাত দেড়টায় বাবার মৃত্যুর খবর পায় সে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাবার নিথর দেহ বাড়ির আঙিনায় রেখে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল নাহিদ। সে সাংবাদিকদের আরও বলে, পরীক্ষার হলে বসেও বাবাকেই ভাবছিলাম। কিছু লিখলেই উত্তরপত্রে সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাবার লাশ চোখে ভেসে উঠছিল। তারপরও কিছু কমন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষার হল থেকে ফিরে নাহিদ জোহরের নামাজ আদায় করে। এরপর বাবার লাশের খাটিয়া কাঁধে নিয়ে বাড়ি থেকে বড়হাড়গিলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে যায়। জানাজা শেষে আবারও খাটিয়া কাঁধে নিয়ে নিজের বাবার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে।