তানিম আহমদ , স্টাফ রিপোর্টার,
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবলা ইউনিয়নে এক পরিবার তাদের মালিকানাধীন জমি হারানোর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জোরপূর্বক জমি দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও উদ্বেগ বিরাজ করছে।
জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি সকালে ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি সুফল মিয়ার নেতৃত্বে এবং ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মসাহিদ মিয়ার সহযোগিতায় একদল লোক শাসন মিয়ার মেয়ে ফাতেহা বেগমের নামজারি করা জমিতে স্থাপনা উচ্ছেদ করে দখল নেওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় ফাতেহা বেগমের পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ১৮-২০ জন আহত হন। আহত নাইম আলম মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং ২০।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এক প্রভাবশালী মহল উক্ত জমি জোরপূর্বক দখলে রাখে। তবে গত ৫ আগস্ট সরকারের পরিবর্তনের পর ৯ সেপ্টেম্বর জমিটি পুনরুদ্ধার করে স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছিল।
১২ জানুয়ারির ঘটনায় আসামিরা দেশীয় অস্ত্রসহ জমিতে প্রবেশ করে স্থাপনা উচ্ছেদ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এতে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয় এবং হামলার শিকার ব্যক্তিদের হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের দাবি, প্রশাসন এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে বিলম্ব করছে।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র ফাতেহা বেগমের পক্ষে থাকলেও দখলদাররা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি প্রয়োগ করে জমিটি নিজেদের কব্জায় রাখতে চাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে মীমাংসার চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
এলাকাবাসী জানান, জমি সংক্রান্ত এই বিরোধ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসানোর চেষ্টা করা হলেও প্রতিপক্ষ কোনো সমঝোতায় আসতে রাজি হয়নি। এলাকাবাসীর মতে, রাজনৈতিক প্রভাব ও লাঠিয়াল বাহিনীর কারণে সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তার জানান, “জমির দলিল ও নামজারি অনুযায়ী যার নামে রয়েছে, তিনিই প্রকৃত মালিক। কেউ যদি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়রা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছে যাতে জমির প্রকৃত মালিক তার জমির দখল ফিরে পান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ না থাকলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।